প্রাচ্যনাট প্রযোজনা : ৪৩
"ব্যতিক্রম ও নিয়ম"
নাটক: বার্টোল্ট ব্রেখট
অনুবাদ: শহীদুল মামুন
নির্দেশনা : আজাদ আবুল কালাম
মঞ্চায়ন : আগামী ১০, ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা !
১২ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার বিকাল ৫.৩০ মি. ও ৭.৩০ মি.।
স্থান : এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল,
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি,(সেগুনবাগিচা) , ঢাকা।
অনলাইন টিকিট :
https://tinyurl.com/3bcbu5t6
টিকিট বুকিং‘র জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৩১৩৭৭৪৪০০
সারসংক্ষেপ :
সিন্দবাদ সওদাগর ব্যবসায়ের খোঁজে বেরিয়েছে। পাড়ি দিতে হবে বিপদসংকুল পথ, দীর্ঘ মরুভুমি, খরস্রোতা নদী। তার সঙ্গী এক সাদামাটা বুদ্ধির মজুর এবং এক স্থানীয় গাইড (পথপ্রদর্শক)। সওদাগরের লক্ষ্য - মরুভূমি পার হয়ে ব্যবসায়িক চুক্তি করে লাভবান হওয়া। সওদাগর আত্মকেন্দ্রিক এবং সন্দেহপ্রবণ; সাথে থাকা মজুরটি গরিব কিন্তু নিষ্ঠাবান, পরিশ্রমী।
সওদাগরের সন্দেহ, গাইড বা মজুর নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে তাঁর অর্থ এবং মূল্যবান দলিল নিয়ে পালাবে। এক চুড়ান্ত মুহুর্তে সওদাগর তাঁর গাইডকে বরখাস্ত করে। এবার সঙ্গী কেবল মজুর। যাত্রাপথে রুক্ষ পথ, তীব্র গরম ও পানির অভাবে এক সময় বণিক প্রায় মূর্ছিত হয়ে পড়ে। সেই মুহূর্তে মজুরটি দয়াপরবশত তার নিজের পানির পাত্র নিয়ে বণিককে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।
আতঙ্কিত সওদাগর ভাবে মজুর তাকে আক্রমণ করতে এসেছে। ভয়তাড়িত হয়ে সে মজুরকে গুলি করে হত্যা করে। পরবর্তীতে আদালতে তাকে বিচারের জন্য হাজির করা হয়। দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর বিচারক বলেন, যেহেতু বণিক ‘যুক্তিসঙ্গত কারনে ভয় পেয়েছিল’, তাই তার কাজকে আত্মরক্ষার চেষ্টা হিসেবে গণ্য করা যায় এবং তাকে দোষী সাব্যস্ত করা অনুচিত। এই রায়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সমাজে ক্ষমতাবানদের ভয়কেও একটি বৈধ যুক্তি হিসেবে দেখতে হবে, এতে যদি দরিদ্রের অধিকার যদি ক্ষুণ্ণ হয় – তবুও।
নাটকটি শেষ হয় এইসব প্রশ্ন তুলে: আইন কাদের জন্য? ‘ন্যায়বিচার’ বলতে আমরা কী বুঝি? ‘ন্যায়বিচার’-এর প্রকৃত ফলভোগী কারা – ইত্যাদি।
নির্দেশনা ভাবনা :
বার্টোল্ট ব্রেখট চর্চা বাংলাদেশে নাট্য আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোত জড়িত। আমাদের নাটকে যে প্রতিবাদের ভাষ্য আর সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান, তা ব্রেখট চর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করে। নির্দেশক হিসেবে ব্রেখট এর নাটক প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে যে অনুপ্রেরণা জন্ম হয়েছিলো অভিনেতা হিসেবে তারই ধারাবাহিকতা ‘ব্যতিক্রম ও নিয়ম’ প্রযোজনায় উজ্জীবিত করে। ফ্রিৎজ বেনেভিটস্ আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের আয়োজনে নির্দেশনা দিয়েছিলো ‘লোক সমান লোক’ (Man Equals Man) নব্বই দশকে। সেই প্রযোজনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ এবং জার্মান নির্দেশকের ব্রেখট বিশ্লেষণ এবং দর্শনগত জায়গায় তার উপলব্ধি এক নতুন চিন্তার জন্ম দিয়েছিলো। ব্রেখট সম্পর্কে অধিত জ্ঞান প্রায়োগিক স্তরে উপস্থাপনের সূত্রপাত তখন থেকে। ‘ব্যতিক্রম ও নিয়ম’ ব্রেখটের শিক্ষামূলক নাট্যগুলোর অন্তর্ভুক্ত। এই শিক্ষা ন্যায়, বৈষম্যহীন সমাজের আহ্বান, ক্ষমতার চেহারা উন্মোচন এবংনাটকের কারিগর আর দর্শকের কাছে সমাজ বিশ্লেষণে বিবেক জাগ্রত করতে উসকে দেন নাট্যকার। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের জনদাবী যা দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতিতে রক্তের রঙে আঁকা আছে তা যেন ‘ব্যতিক্রম ও নিয়ম’ নাটকেরই বিষয়-আশয়। অপেক্ষাকৃত নবীন নাট্যজনদের এই প্রয়াস বাংলাদেশে ব্রেখট চর্চায় এক অকিঞ্চিত পদক্ষেপ হয়ে রইবে বলে আশা রাখি।
মঞ্চে :
সওদাগর- সাখাওয়াত হোসেন রেজভী / আহম্মেদ সাকী
কুলি - শতাব্দী ওয়াদুদ / শাহীন সাইদুর
গাইড - ইয়াদ খোরশিদ ঈশান / রকি খান
বিচারক ১ - মোঃ রফিকুল ইসলাম / জগন্ময় পাল
বিচারক ২ - অদ্রী জা আমিন / অনসূয়া চক্রবর্তী অপালা
বিচারক ৩ - ডায়না ম্যারেলিন/ নূরে জান্নাত ওরিশা
পুলিশ ১ - পরশ লোদী / তাপস সরকার রুদ্র
পুলিশ ২ - ফয়সাল কবির সাদি / তৌফিকুর রহমান রেইন
কুলির স্ত্রী/ অভিযোগকারী – তাসনুভা কবির আদিতা/
তাসফিয়া ফাইরোজ আনান/ ঝুমকা মন্ডল
সরাইখানার মালিক - ফুয়াদ বিন ইদ্রিস / আল আমিন খন্দকার
কাফেলার নেতা - শ্রাবণ শামীম / তাপস সরকার
সূত্রধর- ডায়না ম্যারেলিন, অদ্রী জা আমিন
নেপথ্যে :
মূল জার্মান নাটক- Die Ausnahme und die Regel
ইংরেজী - Exception and the Rule
নাট্যকার - বার্টোল্ট এবং ব্রেখট
নাটক : ‘ব্যতিক্রম এবং নিয়ম’
অনুবাদ - শহিদুল মামুন
নির্দেশনা – আজাদ আবুল কালাম
মঞ্চ ও আলো পরিকল্পনা – মোঃ সাইফুল ইসলাম
সঙ্গীত – নীল কামরুল
কোরিওগ্রাফি – স্নাতা শাহরিন
পোশাক – বিলকিস জাহান জবা
পোস্টার - সব্যসাচী হাজরা
কৃতজ্ঞতা :
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
দেশাল